করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ মহামারিতে বিশ্বজুড়ে স্কুলগুলো বন্ধ থাকার কারণে বিকল্প উপায়ে শুরু হওয়া পাঠদান কার্যক্রম (অনলাইন ক্লাস) থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী। ভার্চুয়াল পাঠদানে যুক্ত হওয়ার মতো সুযোগ নেই তাদের।
বুধবার (২৬ আগস্ট) ইউনিসেফ থেকে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় এসব তথ্য জানা গেছে।
ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ স্কুল শিক্ষার্থীর অনলাইনে ক্লাস করার মতো অবকাঠামোগত সুযোগ নেই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রায় দেড়শ কোটি শিশুর অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ নেই। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চল যেখানে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছায়নি সেখানকার শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে। ঐ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বিশ্বের শিশুদের ৪৯ শতাংশই প্রাইমারি স্কুলগামী।
জাতিসংঘ শিশু উন্নয়ন তহবিল ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েট্টা ফোরে এক বিবৃতিতে বলেন, মাসের পর মাস ধরে এত শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হওয়াটা শুধু নিছক একটা সংখ্যা নয়, এটা বৈশ্বিক শিক্ষা সংকট। আগামী কয়েক দশক ধরে অর্থনীতি ও সমাজে এর প্রতিক্রিয়া অনুভূত হতে পারে।
মহামারি ঠেকাতে জারি লকডাউন ও স্কুল বন্ধ থাকার কারণে বিশ্বজুড়ে ১৫০ কোটি শিশুর পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আনুমানিক এক হিসাবে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
তবে সব অঞ্চলে পরিসংখ্যানটি অবশ্য এক রকম নয়। যেমন অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হওয়ার দিক থেকে ইউরোপের শিশুরা যতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আফ্রিকা কিংবা এশিয়ার দেশগুলোর চেয়ে তা অনেকটা কম।
অনলাইন ক্লাস বঞ্চিতদের ৬ কোটি ৭০ লাখ পূর্ব এবং দক্ষিণ আফ্রিকার, ৫ কোটি ৪০ লাখ পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার, ৮ কোটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং পূর্ব এশিয়ার, ৩ কোটি ৭০ লাখ উত্তর মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার, ১৪ কোটি ৭০ লাখ দক্ষিণ এশিয়ার এবং ১ কোটি ৩০ লাখ লাতিন ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মতো দেশগুলোর হিসাব দেওয়া হয়নি।
ইন্টারনেট, টেলিভিশন এবং রেডিওর পর্যাপ্ততার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের প্রায় একশোটি দেশের কাছ থেকে নেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে জাতিসংঘ।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, যেসব শিশুর অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে তারাও নানা ধরনের বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে বাড়িতে পরিবেশ না থাকা, পারিবারের কাজ করার চাপ অথবা তাদের কাছে থাকা ডিভাইসটির কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা সমাধান করার মতো কারিগরি সহযোগিতার অভাব ইত্যাদি।
সূত্রঃ বার্তা সংস্থা এপি।