বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে, গত জুন মাসেই দেশে ১০১ জন নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের ঘটনাসহ মোট ৩০৮ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়।
উপ-পরিষদে সংরক্ষিত ১৪টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে লিখিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বুধবার (০১ জুলাই) পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ধর্ষণের শিকার ১০১ জনের মধ্যে ৬৯ জন ধর্ষণ ও ২৫ জন গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ সময় ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে সাত জনকে। এ ছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ১৫ জনকে। উক্ত এক মাসে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে তিন জন। যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ছয় জন। একই সময় অ্যাসিড আক্রান্তের শিকার হয়েছে এক জন। অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছে চার জন। অপহরণের শিকার হয়েছে মোট ১৪ জন। এ সময় পতিতালয়ে বিক্রি করা হয় এক জনকে। একই সময় বিভিন্ন কারণে ৬২ জন নারী ও কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে পাঁচ জনকে।
প্রতিবেদন মতে, এ সময় গৃহপরিচারিকা হত্যা করা হয়েছে দুই জন এবং এক জন গৃহপরিচারিকা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়।
গত মাসে যৌতুকের কারণে নির্যাতন করা হয়েছে সাত নারীকে। একই সময় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৯ জন নারী ও কন্যাশিশু এবং উত্ত্যক্ত করা হয় পাঁচ জনকে।
গত এক মাসে বিভিন্ন নির্যাতনের কারণে ১৭ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। ৩৪ জন নারী ও কন্যাশিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ফতোয়ার শিকার হয়েছে এক জন। বাল্যবিবাহ হয়েছে এক কন্যাশিশুর। এছাড়া নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দুই জন নারী ও শিশু।
মহিলা পরিষদ মনে করে, করোনাকালে নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। কিন্তু সব তথ্য গণমাধ্যম পর্যন্ত পৌঁছায় না। নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণসহ দ্রুত গ্রেফতার এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানায় এবং এ ধরনের প্রতিরোধে আশু কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার, প্রশাসনের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে মহিলা পরিষদ।