পদ্মা রেল সেতু প্রকল্পের ঠিকাদার এরশাদ গ্রুপের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল একটি চাঁদাবাজ চক্র। এরশাদ গ্রুপের অফিসে সেই চাঁদার টাকা আনতে গিয়ে পুলিশের কাছে অস্ত্রসহ আটক হয়েছেন দুই জন। জানা গেছে, একটি প্রভাবশালী মহল তাদের ছাড়িয়ে নিতে তদবির করছে। আটককৃতরা হলেন- মাকসুদ বাবুল মোল্লা (৪৫) ও আবু তালেব লালু (৩১)।
মঙ্গলবার (২৩ জুন) রাজধানীর কলাবাগানে নাসির ট্রেড সেন্টারের এরশাদ গ্রুপের কার্যালয় থেকে তাদের আটক করা হয়।
এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান এরশাদ আলী সিএনএন ক্রাইম নিউজকে বলেন, পদ্মা রেল সেতু প্রকল্পের জন্য আনা পাথর, কয়েকটি লাইটারেজ জাহাজে করে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সে পাথরগুলো প্রকল্প এলাকায় নামাতে (আনলোড করতে) গেলে একটি চক্র বাধা দেয়। পাথর নামানোর জন্য গত কয়েকদিন ধরেই ৫০ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল আমাদের কাছ থেকে।
পদ্মাসেতু প্রকল্পের এক প্রকৌশলী চাঁদা দাবি করে আসছিলেন অভিযোগ করে এরশাদ আলী বলেন, পদ্মাসেতু প্রকল্পের একজন প্রকৌশলী লাইটার জাহাজের মাল খালি করতে বাধা দেন। সরকারি প্রকল্পের মাল কেন আনলোড করতে দেওয়া হচ্ছে না— এ মর্মে আমরা ২০ দিন আগে জাজিরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। এরপর লোক মারফত তিনি ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। ৫০ লাখ টাকা দিলে মাল খালাস করতে দেবেন বলে জানান। জিডি করলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। ফলে গত ২০ দিন ধরে আমরা মাল নামাতে পারছি না।
তিনি বলেন, প্রায় তিন কোটি টাকা ক্ষতি হয়ে গেলে আমরা ৫০ লাখ টাকা দিতে রাজি হই। তবে আজ যারা টাকা নিতে এসেছিল, তারা ওই প্রকৌশলীর নাম বলেনি। নাসির ট্রেড সেন্টারের তৃতীয় তলায় এরশাদ গ্রুপের অফিসে ১০/১২ জন অস্ত্র দেখিয়ে আমাদের জিএমের কাছে শুধু ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। না দিলে গুলি করার ভয় দেখায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে দু’জনকে অস্ত্রসহ আটক করতে পারে। বাকিরা পালিয়ে যায়।
কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিতোষ চন্দ্র সিএনএন ক্রাইম নিউজকে জানান, এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যানের অভিযোগের ভিত্তিতে দুইজনকে থানায় আনা হয়েছে। তবে তাদের কাছে থাকা অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও অস্ত্রের মুখে জিম্মির অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আটকদের ছেড়ে দিতে প্রভাবশালী মহলের তদবিরের অভিযোগ রয়েছে— এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসি হাসান আরেফীন বলেন, কে থানায় ফোন করেছে, জানি না। তবে মামলা হয়নি এখনো। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যারা অস্ত্রসহ টাকা নিতে গিয়েছিল, তাদের অস্ত্রের লাইসেন্স আছে। এছাড়া এরশাদ গ্রুপের সঙ্গে তাদের পূর্ব ব্যবসায়িক পরিচয় রয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এক প্রশ্নের জবাবে এরশাদ আলী জানান, যারা অস্ত্রসহ এসেছিলেন বা যারা পুলিশের কাছে অস্ত্রসহ আটক হয়েছেন, তাদের কাউকে তিনি চেনেন না।