জাতীয় সংসদের চলতি বাজেট অধিবেশনে অন্তত ৪০ জন সংসদ সদস্যকে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে সংসদের হুইপের দফতর থেকে ফোন করে তাদের সংসদ অধিবেশনে যোগ না দিতে নিরুৎসাহিত করা হয়।
এদের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সরকারি দলের প্রভাবশালী সদস্যরাও রয়েছেন। তালিকায় চট্টগ্রামের এক মন্ত্রী, উপ মন্ত্রী, সাবেক মন্ত্রী ও তিন সাংসদও রয়েছেন।
জানা গেছে, বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে যেসব সংসদ সদস্য ঝুঁকিপূর্ণ, যেসব সদস্য বা তাদের পরিবারের কারও করোনা পজিটিভ হয়েছে এবং করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে গেছেন, তাদের সংসদে না যেতে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে এসব ঝুঁকিপূর্ণের মধ্যে কোনও সংসদ সদস্যের টানা ৯০ দিন অধিবেশনে অনুপস্থিতির আশঙ্কা থাকলে, তাদের হাজিরা দিতে একদিনের জন্য অধিবেশনে উপস্থিত হওয়ার বিষয়টি ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে যেসব সংসদ সদস্যকে অধিবেশনে না আসতে অনুরোধ করা হয়েছে তারা হলেন—বিরোধীদলীয় নেতা ও ময়মনসিংহ-৪ আসনের এমপি রওশন এরশাদ, সংসদ উপনেতা ও ফরিদপুর-২ আসনের সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ঝালকাঠী-২ আসনের আমির হোসেন আমু, সরকারদলীয় সিনিয়র সংসদ সদস্য ভোলা-১ আসনের তোফায়েল আহমেদ।
গোপালগঞ্জ-২ আসনের শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকা-১৮ আসনের অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, চট্টগ্রাম-১ আসনের ইঞ্জিনিয়ার মোশররফ হোসেন, ফরিদপুর-৩ আসনের খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বরিশাল-১ আসনের আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, নওগাঁ-৪ আসনের ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক।
জামালপুর-১ আসনের আবুল কালাম আজাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ঢাকা-৮ আসনের রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি ও পিরোজপুর-২ আসনের আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সরকারি দলের সংসদ সদস্য শেরপুর-৩ আসনের একে এম ফজলুল হক, পাবনা-৩ আসনের মকবুল হোসেন।
ময়মনসিংহ-৬ আসনের মোসলেম উদ্দিন, পটুয়াখালী-১ আসনের মো. শাহজাহান মিয়া, ঠাকুরগাঁও-২ আসনের মো. দবিরুল ইসলাম, সরকারি দলের হুইপ ও খুলনা-১ আসনের পঞ্চানন বিশ্বাস, সংরক্ষিত আসনের শেখ এ্যানী রহমান ও জিন্নাতুল বাকিয়া এবং বিএনপির সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার।
এছাড়া সংরক্ষিত আসনের সদস্য ও রাশেদ খান মেননের স্ত্রী লুৎফুন নেসা খানকেও অনুরোধ করা হয়েছে অধিবেশনে যোগ না দিতে।
রাজবাড়ী-১ আসনের কাজী কেরামত আলী, যশোর-৩ আসনের কাজী নাবিল আহমেদ ও টাঙ্গাইল-৬ আসনের আহসানুল ইসলামকে (টিটু) অধিবেশনে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
বাগেরহাট-২ আসনের শেখ তন্ময়কেও অধিবেশনে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। বাগেরহাট-১ আসনের এমপি ও শেখ তন্ময়ের বাবা শেখ হেলাল উদ্দিনকে আগেই অনুরোধ করা হয়েছে এবারের অধিবেশনে যোগ না দিতে।
চট্টগ্রাম থেকে সর্তকতার অংশ হিসেবে সংসদ অধিবেশনে যোগ না দিতে যাদের অনুরোধ করা হয়েছে তারা হলেন, চট্টগ্রাম-১ আসনের ইঞ্জিনিয়ার মোশররফ হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীব বাহাদুর উশৈসিং, চট্টগ্রাম-৬ আসনের এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম ৮ আসনের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম-১৬ আসনের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।
এছাড়াও পরিবারের সদস্যদের করোনা পজিটিভ হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকেও সংসদে যোগ না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে৷ এদের মধ্যে বীর বাহাদুর উশৈসিং, মোস্তাফিজুর রহমান ও মোছলেম উদ্দিন আহমেদ করোনা পজেটিভ।
হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, আমরা বাজেট অধিবেশনে উপস্থিতির বিষয়ে জোর গুরুত্ব দিচ্ছি না। গুরুত্ব দিচ্ছি স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর। এজন্য কিছু কিছু সিনিয়র সংসদ সদস্যকে বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে বৈঠকে অংশ নিতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।