বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তীর বাবা গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা এড. তপন কুমার চক্রবর্তী এবং ঠাকুমা উষা রানী চক্রবর্ত্তী এখন রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
গতকাল রোববার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৭৮৯ রাজাকারের তালিকা ঘোষণা করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এই তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সেই তালিকায় মনীষা চক্রবর্ত্তীর বাবা গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা এড. তপন কুমার চক্রবর্তীকে ৬৫ নাম্বার এবং পাকিস্থানি মিলিটারি বাহিনীর হাতে নিহত এড. সুধির কুমার চক্রবর্ত্তীর সহধর্মিণী উষা রানী চক্রবর্ত্তীকে ৪৫ নম্বারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী অভিযোগ করেছেন, শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য আমার রাজনীতি করার খেসারত হিসেবে আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমার বাবা একজন গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা, গেজেট ক্রমিক নং ১১২ পৃষ্টা ৪১১৩। তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পাচ্ছেন। কিন্তু আজ রাজাকারের তালিকায় তিনি ৬৫ নাম্বার রাজাকার।
তিনি বলেন, ঠিক একই ভাবে আমার ঠাকুমা উষা রানী চক্রবর্ত্তীকে রাজাকারের তালিকায় ৪৫ নম্বারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অথচ আমার ঠাকুরদা এড. সুধির কুমার চক্রবর্ত্তীকে পাকিস্থানি মিলিটারি বাহিনী বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তিনিও ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত। তাঁর সহধর্মিণী আমার ঠাকুমা।ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী তাঁর ফেইসবুক পেইজে এই বিষযে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। নিচে পুরো স্ট্যাটাস তুলে ধরা হলো:
মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করার পুরস্কার পেলাম আজ। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগকে।
সদ্য প্রকাশিত রাজাকারদের গেজেটে আমার বাবা এবং ঠাকুমার নাম প্রকাশিত হয়েছে।
আমার বাবা এড. তপন কুমার চক্রবর্তী একজন গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা,ক্রমিক নং ১১২ পৃষ্টা ৪১১৩। তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও পেয়ে থাকেন! আজ রাজাকারের তালিকায় তিনি ৬৫ নাম্বার রাজাকার।
আমার ঠাকুরদা এড সুধির কুমার চক্রবর্ত্তীকে পাকিস্থানি মিলিটারি বাহিনী বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তিনিও ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত। তাঁর সহধর্মিণী আমার ঠাকুমা উষা রানী চক্রবর্ত্তীকে রাজাকারের তালিকায় ৪৫ নম্বারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য আমার রাজনীতি করার খেসারত দিতে হচ্ছে আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে। ধন্যবাদ আওয়ামীলীগ সরকারকে।
আমার দল বাসদ আমাকে শিখিয়েছে অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করতে। মিছিল থেকে গ্রেফতার করে থানায় নির্যাতন করে ওরা বলেছিল যে আন্দোলন যেন না করি, নির্বাচনে যেন অংশ না নিই। রাজী না হওয়ায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে অজামিনযোগ্য মামলা দিয়ে জেলে প্রেরণ করেছে। আমরা জেল খেটেছি, নির্যাতন সহ্য করেছি কিন্তু অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি।
ভয় দেখিয়ে বা বিপদে ফেলে আমাদের কিছু করা যাবে না। অভুক্ত, অর্ধভুক্ত গরীব খেটে খাওয়া মানুষ আছে আমাদের দলের সাথে। আছে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী। অতীতের মতো আজ এবং আগামীতে আপনাদের পাশে পাবো সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।উল্লেখ্য , ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী বাসদ রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি ২০১৮ সালের বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি মেয়র পদে বাসদের নির্বাচনী প্রতীক মই মার্কায় নির্বাচন করেন। বরিশালে বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে সারাদেশে আলোচনায় আসেন। এরপর থেকে তাকে নানা ভাবে হুমকি মামলা দেওয়া হয়। জেল কাটেন গরীবের ডাক্তার খ্যাত মনীষা চক্রবর্ত্তী। ফেসবুক থেকে নেয়া।
সিএনএন ক্রাইম