করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) আঁতুড়ঘর চীনের উহানে লকডাউন তুলে নেয়ার এক মাসের মাথায় আবারও ক্লাস্টার (গুচ্ছ) সংক্রমণ শুরু হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাব শূন্যে নেমে আসায় উন্মুক্ত করে দেয়া হয় শহরটি। তুলে নেয়া হয়েছিল সব বিধিনিষেধ। এদিকে বিশ্বে নতুন সংক্রমণের দিক থেকে শীর্ষে ভারত ও রাশিয়া।
ভারত ও রাশিয়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগী। আক্রান্তের সংখ্যায় ইতালিকেও ছাড়িয়ে গেছে রাশিয়া। অন্যদিকে ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সাড়ে ৪ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। সংক্রমণ ও মৃত্যু কমে আসায় বেশ কয়েকটি দেশে লকডাউন তুলে নেয়া হচ্ছে।
নিউজিল্যান্ডে খুলছে স্কুল ও অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পাঁচ ধাপে লকডাউন তুলে নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ব্রিটেন। তুরস্কে খুলে দেয়া হয়েছে শপিংমল ও সেলুন। ফ্রান্সে শর্ত সাপেক্ষে লকডাউন প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এপ্রিলের শুরুতে উহান কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছিল, তারা ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। এমনকি স্থানীয় পর্যায়ে সংক্রমণ শূন্যের কোঠায় নেমে আসার ঘোষণাও দেয়া হয়। এর এক মাস পর সেখানে পুনরুত্থান হয়েছে করোনাভাইরাসের।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সোমবার (১১ মে) জানিয়েছে, লকডাউন প্রত্যাহারের পর প্রথমবার উহানে নতুন করে ক্লাস্টার বা গুচ্ছ আকারে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
এমন খবরে সেখানে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার শহরটিতে নতুন করে ৫ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। তারা সবাই একই আবাসিক কম্পাউন্ডের বাসিন্দা। নতুন আক্রান্তের প্রত্যেকেই উপসর্গহীন ছিল। তাদের কারও মধ্যেই করোনার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।
উত্তর কোরিয়ার সীমান্তবর্তী চীনের লানেও নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এতে শহরটিতে লকডাউন জারি করা হয়েছে। গুলানের সব জনসমাগম স্থান, গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়ে বাসিন্দাদের ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। শহরটিকে উচ্চমাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, সোমবার (১১ মে) দ্বিতীয় দফায় চীনে একদিনে সর্বোচ্চ ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৮২ হাজার ৯৫৮ জন, মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৬৩৩ জনের। বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওয়ার্ল্ডওমিটারসের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ লাখ ৩২ হাজার ৩৫১ জন।
মারা গেছেন ২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪৩ জন। অবস্থা আশঙ্কাজনক ৪৬ হাজার ৯৩১ জনের। সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ১৭ হাজার ৪৮৩ জন। রোববার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯ হাজার ৮৭৫ জন, মারা গেছেন ৩ হাজার ৫১০। যা আগের দিনে ছিল ৪ হাজার ২৪৮ জন।
যুক্তরাষ্ট্রে রোববার (১০ মে) মারা গেছেন ৭৫০ জন, যা আগের দিনে ছিল ১ হাজার ৪২২ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ১৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩১৭, মৃত্যু হয়েছে ৮১ হাজার ১৫৭ জনের। স্পেনে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ৬৮ হাজার ১৪৩ জন, মারা গেছেন ২৬ হাজার ৭৪৪ জন। রোববার দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১৪৩।
ইতালিতে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ১৯ হাজার ৮১৪ জন, মারা গেছেন ৩০ হাজার ৭৩৯ জন। রোববার দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১৬৫ জনের। যুক্তরাজ্যে মোট আক্রান্ত ২ লাখ ২৩ হাজার ৬০ জন, মারা গেছেন ৩২ হাজার ৬৫ জন। রোববার দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৬৮ জনের।
খবরঃ বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্স এবং ওয়ার্ল্ডওমিটারস।