আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, চট্টগ্রামে যাতে প্রতিদিন অন্তত ৫০০ নমুনা পরীক্ষা করা হয় সেজন্য কাজ করা হচ্ছে। মানুষের জীবন রক্ষার পাশাপাশি সকারকে মানুষের জীবিকাকেও রক্ষা করতে হয়। সেই কারণে জীবন ও জীবিকা দুটোই রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার নানাবিদ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৭ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে করোনা প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সমন্বয় সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
করোনা সঙ্কটে চট্টগ্রাম জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রাম অঞ্চলে এখনও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অনেক ভালো। কিন্তু গত ২৩ এপ্রিলের পর থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যু বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রামে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য মহানগরের হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল সরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে ২০টি আইসিইউ ইউনিট, ৬০টি আইসোলেশন বেডসহ ১০০টি বেড স্থাপন করা হবে। চট্টগ্রামে যাতে প্রতিদিন অন্তত ৫০০ নমুনা পরীক্ষা করা হয় সেজন্য কাজ করা হচ্ছে।
করোনার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে দীর্ঘসময় ব্যয় হচ্ছে এতে আক্রান্তরা ঘুরে বেড়াচ্ছে ও ছড়াচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আজকের সভায় বলা হয়েছে আগে টেস্টের রিপোর্ট পেতে সাতদিন লাগতো। এখন সেটি কমিয়ে চারদিনে এনেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও আরেকটি করোনা পরীক্ষার ল্যাব চালুর বিষয়ে চেষ্ঠা চলছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক সভায় জানিয়েছেন। চট্টগ্রামে অন্তত প্রতিদিন ৫শ’ নমুনা পরীক্ষা যাতে করা যায় সেই চেষ্ঠা চলছে। ক্রমান্বয়ে এসমস্যা কমে যাবে।
এসময় তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মার্কেটগুলোর প্রবেশ পথে ডিজইনফেকশন চেম্বার স্থাপন করতে হবে। মাস্ক স্যানিটাইজারের পাশাপাশি যদি মার্কেটে ঢোকার সময় ডিজইনফেকশন চেম্বারের মাধ্যমে প্রবেশ করেন তাহলে ডিজইনফেক্টেড হয়ে যাবে। প্রতিটি শপিংমল ও বিপনী বিতানের সামনে স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কবাণী না মানলে মৃত্যুর ঝুঁকি আছে এমন ব্যানার সাঁটাতে হবে। এবং প্রবেশ পথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এবং ক্রেতা বিক্রেতা সবাইকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সামাজিক ও শারিরীক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী এ দুর্যোগ মুহূর্তে অসহায়দের পাশে থাকতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান। ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে যাতে সঠিক মানুষ ত্রাণ পায় এবং যারা চাইতে পারেনা তারাও যাতে ত্রাণ পায় সেজন্য জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে সমন্বয় করার নির্দেশ দেন।
এছাড়া তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত এলাকা লকডাউনের জন্য অনেক পুলিশ সদস্যের দরকার হচ্ছে। এতে পুলিশের অন্যদিকে দায়িত্বের ব্যাঘাত ঘটছে। এক্ষেত্রে লকডাউনকৃত এলাকায় কিংবা ভবিষ্যতে লকডাউনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরও বেশি সংখ্যক আনসার এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সমন্বয় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সংসদ সদস্য বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামাল মোস্তাফা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. হাসান শাহরিয়ার কবির, জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হকসহ অন্যান্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।