সরকারঘোষিত রাজাকার, আলবদর ও আলশামসের তালিকায় নাম রয়েছে রাউজানের একেএম ফজলুল কবির চৌধুরীর। তিনি বর্তমান সরকারদলীয় সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর পিতা।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যদের নামের তালিকা প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।ওই তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। তালিকায় ২০৩, ৫৯৫ ও ৬০৭ নম্বর ক্রমিকে তিন দফায় নাম রয়েছে একেএম ফজলুল কবির চৌধুরীর। অন্যদিকে ১৯৯ ক্রমিক নম্বরে আছে তার বড় ভাই একেএম ফজলুল কাদের চৌধুরীর নাম। ফজলুল কবিরের পিতার নাম খান বাহাদুর আবদুল জব্বার চৌধুরী, তার বাড়ি রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে।
প্রসঙ্গত, একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা পাক হানাদার বাহিনীকে পথঘাট চেনাতে ও মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছে, তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। প্রথম দফায় ১০ হাজার ৭৮৯ রাজাকার, আলবদর ও আলশামসের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রেকর্ড সংগ্রহ করে রাজাকারদের তালিকা করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকার সময় অনেক রাজাকার-আলবদরের রেকর্ড সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পাকিস্তান সরকার কর্তৃক যারা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং যেসব পুরনো নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত ছিল সেটুকু প্রকাশ করেছি। তৎকালীন বিভিন্ন জেলার রেকর্ড রুম থেকে এবং বিজি প্রেসে ছাপানো তালিকাও সংগ্রহের প্রচেষ্টা চলছে। যাচাই-বাচাই করে ধাপে-ধাপে আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে।
উল্লেখ্য, ফজলুল কবির চৌধুরী ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধীদলীয় নেতা, প্রাদেশিক আইন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাবেক সংসদ সদস্য। ফজলুল কবিরের আরেক ভাই ফজলুল কাদের চৌধুরীও মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে সরাসরি সক্রিয় ছিলেন। তিনি পাকিস্তানের পার্লামেন্টের স্পিকার ছিলেন। ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালের রায়ে ফাঁসির দন্ডে দন্ডিত হয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই তালিকা প্রস্তুত করা হয় নি, প্রকাশ করা হচ্ছে।মুক্তিযোদ্ধাদেরও একটি আনুষ্ঠানিক তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে উল্লেখ করেন মি. হক। এই তালিকাটি প্রকাশ করা হবে আগামি বছরের ২৬শে মার্চ।মন্ত্রী বলেন, সেই সময় ১৯টা জেলা ছিল। জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে ঐ সময়ে তাদের রেকর্ড রুমের তালিকা দিয়ে তাদের সহযোগিতা করার জন্য। দুঃখজনক হল সেই ভাবে আমরা সহযোগিতা পাইনি। ১৯৭১ সালের সব গেজেট আমরা চেয়েছি। তার সবগুলো দিতে পারেনি।
মন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিএনপি, জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর তারা সুকৌশলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনেক রেকর্ড সরিয়ে ফেলেছে। তালিকা তৈরি করতে গিয়ে যথাযথ সহযোগিতা তারা পাননি।
সিএনএন ক্রাইম