কওমি মাদ্রাসা ১৫০ বছরের ঐতিহ্য এবং দারুল উলুম দেওবন্দের নীতি-আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে সরকারি অনুদান নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটি (বেফাক)।
শনিবার (২ মে ) সরকারি অনুদান বিষয়ে বেফাকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মজলিসে খাসের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বেফাকের সিনিয়র সহসভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) হযরত মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস সাহেব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ৬ হাজার ৯৫৯ টি কওমি মাদ্রাসাকে ৮ কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছেন গত ৩০ এপ্রিল। এর প্রতিক্রিয়ায় এ সিদ্ধান্ত জানালো বেফাক।
বেফাকের সভায় নেতারা বলেন, উপমহাদেশব্যাপী বিস্তৃত কওমি মাদরাসাগুলো ভারতের বিখ্যাত দারুল উলুম দেওবন্দের নীতি-আদর্শ ও শিক্ষাক্রম অনুসরণ করেই পরিচালিত হয়ে আসছে। দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠাকালে অলঙ্ঘনীয় যে ‘উসুলে হাশতেগানা’ তথা আট মূলনীতি নির্ধারণ করে, তার অন্যতম একটি হলো যেকোনো পরিস্থিতিতে সরকারি অনুদান নেওয়া থেকে বিরত থাকা। সুতরাং এই মূলনীতিকে বিসর্জন দিয়ে দেশের কোনো কওমি মাদরাসা সরকারি অনুদান গ্রহণ করতে পারে না। অতীতেও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও কঠিন সংকটের সময়ে আমাদের পূর্বসূরীরা অনুদানের জন্য সরকারের দ্বারস্থ হননি।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, কওমি মাদরাসার দায়িত্বশীলদের প্রতি বিশেষ আহ্বান, ক্ষণিকের সঙ্কট উত্তরণে সরকারি অনুদান গ্রহণ করে অনন্তকালের কুদরতি সাহায্যের রাস্তা বন্ধ করবেন না। আল্লাহ পাকের উপর দৃঢ় ভরসা রাখুন, করোনার মহামারি থেকে বিশ্ববাসী ও মুসলিম উম্মার মুক্তির জন্য দোয়া জারি রাখুন। সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা’আলা আমাদের হেফাজত করবেন, ইনশাল্লাহ।
বৈঠক থেকে বেফাকের সম্মানিত সভাপতি আল্লামা আহমদ শফির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই সিদ্ধান্তকে অনুমোদন করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর), মাওলানা ছফিউল্লাহ, হযরত মাওলানা মাহফুযুল হক, মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, মাওলানা মুফতি নূরুল আমিন, মাওলানা মনিরুজ্জামান।