পঞ্চগড় সদর উপজেলায় গ্রাম্য শালিসে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধরের শিকার হয়ে খয়রুল ইসলাম (১৭) নামের এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে।
পুলিশ শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সকালে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) মধ্যরাতে উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের সোনারবান এলাকার বাঁশবাড়ি গ্রামে। খয়রুল ওই এলাকার মো: আব্দুর রশিদের ছেলে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানা গেছে, নিহত কিশোর খয়রুল ইসলাম ওই এলাকার অপ্রাপ্ত এক শিশুকে প্রেম নিবেদন করায় ওই গ্রামের প্রভাবশালী কিতাব আলী, মো: জাকের আলী, ওসমান আলী, হাসেন আলী, দেলওয়ার হোসেন এবং ওই গ্রামের মৃত ইবরাহিম আলীর ছেলের নেতৃত্বে স্থানীয় ওয়াক্তিয়া মসজিদের সামনে শালিসি বৈঠক বসে।
দীর্ঘক্ষন পরস্পর বিরোধী কথাবার্তা শোনার পর কিতাব আলীর রায়ে নিহত খয়রুলকে দোররা মারার সিদ্ধান্ত হয়। নিহত খয়রুলের বাবা আব্দুর রশিদ নিজ সন্তানকে শাসনের জন্য তাঁর পায়ের জুতা খুলে শাসন করে।
এসময় উপস্থিত গ্রাম্য মাতব্বররা বিচার সন্তোষজনক না হওয়ার দাবি এনে পুণরায় নিজেরাই তাকে দোররা মারে। দোররা মারা কালীন মাতব্বর দেলওয়ার হোসেন নিহত খয়রুলের বুকে লাথি মেরে ফেলে দেয় এবং বলতে থাকে এই লজ্জার চেয়ে তোর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করাই ভাল।
এ কথা শোনার সাথে সাথে খয়রুল শালিস ত্যাগ করে তার নিজ ঘরের গলায় কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
খয়রুলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: নুরুজ্জামান নুরু।
তিনি বলেন, শালিসি বৈঠকের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা, তবে আত্মহত্যার পর খবর পেয়েছি।
পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু আক্কাস আহমদ আত্মহত্যার বিষয়টি সিএনএন ক্রাইম নিউজকে নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।