রমজান আসন্ন। দুয়ারে কড়া নাড়ছে প্রস্তুতি। বেড়েছে নিত্যপণ্যের চাহিদা। ফলে ধীরে ধীরে অস্থির হতে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের বাজার। চলছে করোনাকালীন লকডাউন, অসাধু ব্যবসায়ীরা এসুযোগইবা ছাড়বেন কেন!
এরই মধ্যে বেড়েছে চাল, তেল, পেঁয়াজ, ছোলা, ডাল, আদা, রসুন, চিনির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে ৩-১০ টাকা। পণ্যের দাম সামনে আরও বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, নিরাপদ বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় মোকামে বেচাকেনা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বাজারে পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে দ্বিগুণ বেড়ে আদার দাম। ভরা মৌসুমেও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে রসুনের দাম।
ক্রেতাদের অভিযোগ, লকডাউন থাকায় রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগে এক শ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ী মানুষকে জিম্মি করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে কার্যকরী মনিটরিং না থাকায় এসব ব্যবসায়ী তার সুযোগ নিচ্ছে। বিভিন্ন অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।
এখনই এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বাজার আরও অস্থির হয়ে উঠতে পারে।
টিসিবি’র তথ্য অনুযায়ী, এক মাসের ব্যবধানে আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ১১৫ শতাংশ। আর দেশি আদার দাম বেড়েছে ১০৯ শতাংশ। চলতি মাসে ১৫টি পণ্যের দাম পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২-৫ টাকা। খুচরা বাজারে চিকন চাল ৬০-৭০ টাকা কেজি, মাঝারি চাল ৫০-৬০ টাকা এবং মোটা চাল ৪২-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে ডালের দামও। মসুর ও মুগ ডালের দাম প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে কেজিতে। মানভেদে অ্যাঙ্কর ডালের কেজি এখন ৪৫-৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৫-৪০ টাকা। ৭৫-৮০ টাকা কেজির ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯০ টাকায়। আর ১২০-১৩০ টাকা কেজির মুগ ডাল এখন ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১২ দিন আগে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া খেসারি ডালের কেজি ১৪০ টাকায় ঠেকেছে। মসুর ডাল ১০ টাকা বেড়ে ছোট মসুর ১৩০ টাকা ও বড় মসুর ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দাম বেড়ে এখন ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রসুনের দামও কেজিতে ১০-৪০ টাকা বেড়ে দেশি রসুন ১৪০-১৮০ টাকা ও আমদানি করা রসুন ১৬০-২০০ টাকা হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তাদের পণ্যের মজুত কমে আসছে। এরই মধ্যে রমজান মাস আসন্ন। তাই সব ধরনের পণ্যের বাড়তি চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। আবার পণ্যের জোগান ঠিক রাখতে পরিবহন খরচ বেশি হচ্ছে, যা গিয়ে পড়ছে পণ্যের ওপর। এজন্যই দাম বেড়েছে।