সংক্রমণ ছড়ানো প্রতিরোধ এবং সংক্রামিত ব্যক্তির থেকে নিজেকে রক্ষা করার দুটি কার্যকর উপায় হল- রেসপিরেটরি হাইজিন এবং হ্যান্ড হাইজিন। কোভিড-১৯ এর থেকে দূরে থাকতে গেলে, হাত এবং রেসপিরেটরি হাইজিন বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যাকটিরিয়া এবং ভাইরাসের মতো জীবাণুগুলি বায়ু, প্রাণী, খাদ্য, শারীরিক তরল, মাটি এবং বিভিন্ন বস্তু দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাতের মাধ্যমে আমাদের শরীরে ছড়ায়। তাই, ঘন ঘন হাত ধোয়া সর্দি, ফ্লু এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সংক্রমণের মতো রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
জীবাণু সংক্রমণ রোধ করতে হাতের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জীবাণু দূর করতে সময়মতো সাবান এবং জল বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে হাতের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা হয়।
যে যে পরিস্থিতিতে হাতের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ –
ক) বাথরুম থেকে বেরোনোর পরে।
খ) কোনও অসুস্থ ব্যক্তির যত্ন নেওয়ার আগে এবং পরে।
গ) খাবার প্রস্তুত করার আগে এবং পরে।
ঘ) কাঁচা মাংস, ডিম বা মৎস্য জাতীয় খাবারে হাত দেওয়ার পরে পরেই।
ঙ) হাত চিটচিটে বা নোংরা হওয়ার পরে।CDC নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে হাত ধোয়ার পরামর্শ দেয়-
ক) জলে হাত ভেজান।
খ) সাবান ব্যবহার করুন এবং দুটি হাত ভালভাবে ঘষুন।
গ) সমস্ত আঙুল, নখ, কব্জি, আঙুলের ডগা এবং হাতের পিছনের অংশ ভাল করে ঘষুন।
ঘ) এরপর, হাত ভাল করে ধুয়ে ফেলুন এবং তারপরে পেপার টাওয়েল দিয়ে হাত মুছে নিন।
বিঃদ্রঃ – পেপার টাওয়েল দিয়ে হাত মুছলে তা ভেজা হাতের চেয়ে জীবাণুর ঝুঁকি হ্রাস করে।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার অ্যালকোহল-ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিম্নলিখিত পরিস্থিতিগুলি বাদ দিয়ে সাবান এবং জলের মতোই কার্যকর –
ক) বাথরুম ব্যবহার করার পরে।
খ) হাত নোংরা বা চিটচিটে থাকলে।
গ) কোনও অসুস্থ ব্যক্তির যত্ন নিলে।
ওরেগন ডিপার্টমেন্ট এফ হিউম্যান সার্ভিসেস-এর মতে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে ব্যবহার করা উচিত –
ক) হাতে সঠিক পরিমাণে স্যানিটাইজার নিন।
খ) আঙ্গুল, তালু, কব্জি, হাতের পিছন দিক এবং আঙুলের ডগা ভালভাবে ঘষুন।
গ) যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনার হাত শুকনো হচ্ছে ততক্ষণ ঘষতে থাকুন।
ঘ) হাত ধোবেন না বা তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলবেন না।
রেসপিরেটরি হাইজিন কীভাবে বজায় রাখা যায়- রেসপিরেটরি হাইজিন জীবাণুর বিস্তার রোধ করার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। এখানে রেসপিরেটরি হাইজিন বজায় রাখার কয়েকটি উপায় দেওয়া হল –
মাস্ক পরুন-
কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় আপনার নাক এবং মুখ ঢাকতে মাস্ক পরুন। এছাড়াও, কাশি এবং হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ ঢাকতে কনুই ব্যবহার করতে পারেন, এটি জীবাণুর বিস্তার রোধ করার অন্য উপায়। তারপর হাত ধুয়ে ফেলুন। তবে, রুমাল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন কারণ এটি ভাইরাসের প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে ওঠে।
টিস্যু ব্যবহার করুন-
কাশি বা হাঁচির সময় টিস্যু ব্যবহার করুন এবং তারপরে এটি সঠিকভাবে ফেলুন। তারপরে সাবান ও জল দিয়ে আপনার হাত ধুয়ে ফেলুন বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। এর ফলে ভাইরাসটি অন্য কোনও ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়বে না।
রেসপিরেটরি হাইজিন বজায় রাখার সময় যেগুলি মনে রাখা উচিত-
ক) মানুষের থেকে কমপক্ষে ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
খ) কোনও বস্তু স্পর্শ করার পরে আপনার নাক, মুখ এবং চোখ স্পর্শ করবেন না।
গ) সারাদিনে ঘন ঘন হাত ধোবেন।
মনে রাখবেন… আপনি যদি নিয়মিত হাতের এবং রেসপিরেটরি হাইজিন বজায় রাখেন তবে বাড়ি বা পাবলিক প্লেস, যেকোনও জায়গায় আপনি সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারেন। যখনই বাড়ির বাইরে বেরোবেন সর্বদা সঙ্গে করে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখুন।