চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন,চট্টগ্রামের ঝুঁকির মাত্রাটা একটু বেশি। কারণ আমাদের বন্দর এবং এয়ারপোর্ট দুটোই আছে। এছাড়া চট্টগ্রামে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি থাকেন। তাদের দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতির গভীরতা বোঝা যাবে আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে।
আশার কথা হচ্ছে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা চট্টগ্রামেই করোনা পরীক্ষা করতে সক্ষমতা অর্জন করবো। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কিট ও স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক-নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুসারে পার্সোনাল প্রটেকশন (পিপিই) পাঠানো হবে।
করোনা থেকে বাঁচতে হলে জানতে হবেঃ
১. জ্বর হলেই আপনি হাসপাতালে চলে যাবেন না (এর মাধ্যমে করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে)। সবার আগে ফোন করবেন হটলাইন গুলোতে। তারা আপনার জ্বরের পরিস্তিতি পর্যবেক্ষন করে বলে দেবে কোথায় যাবেন।
২. কারো যদি কোনো প্রবাসীর সঙ্গে বা করোনা আক্রান্তদের সঙ্গে সংস্পর্শে আসার হিস্ট্রি না থাকে তাহলে তাকে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত হবে না।
৩. যদি এমন হয় যে আপনার জ্বর বা সর্দি সারছেনা, তাহলে হাসপাতালের ফ্লু কর্ণারে যাবেন (চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে দুটি ‘ফ্লু কর্নার’ খোলা হয়েছে)। সর্দি, কাশি ও জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের প্রাথমিক সেবা এসব কর্নারে দেওয়া হবে। তাঁদের মধ্যে কারও যদি করোনা ভাইরাসের উপসর্গ থাকে, তাহলে তাঁকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
৪. যদি এমন হয় যে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, বুকে ভারি ভারি ভাব লাগছে (কেউ চেপে ধরেছে এমন)। কশি থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে। তাহলে ফৌজদারহাট বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস হাসপাতাল অথবা চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
৫. করোনা ওজনে ভারি ভাইরাস। তাই এটি বাতাসে ভেসে বেড়ায় না। বরং আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি দিয়ে নির্গত এ জীবানু মাটিতে ও আশপাশের আসবাবে, দোকানের চায়ের কাপে, লিফটের সুইচে, হকারের দেওয়া পত্রিকায়, পরিবহনে অর্থাৎ আপনার চারপাশে পরে থাকে। এ কারণে করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে বাঁচাতে আমাদের সবার আগে বারবার হাত ধোয়া নিশ্চিত করতে হবে। কারন আমরা হাত দিয়ে যেসব জিনিষ স্পর্শ করছি, তাতেই হয়তো আছে সেই প্রাণঘাতি ভাইরাস।
৬. যতটা সম্ভব ঘরে থাকুন। প্রবাসীদের থেকে দুরে থাকুন, সে আপনার মা-বাবা, স্বামী-স্ত্রী যেই হোক। শুধু নিজে সচেতন হলে হবে না। জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। চট্টগ্রামে বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে প্রচুর জনসমাগম হয়। এ প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
৭ . বাজারে যেসব মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে তা কোনো ভাবেই করোনা প্রতিরোধে সহায়ক নয়। এ জন্য পপলিন কাপড় দিয়ে তিন স্থরের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এটি একবারে ৮ ঘন্টা ব্যবহার করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
আমাদের জন্য করোনা ভাইরাস এক ভয়াবহ দুর্যোগ বয়ে আনতে পারে। এ ব্যাপারে এখনই গভীরভাবে ভাবতে হবে।