বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত ঠিকাদার জি কে শামীমের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জি কে বিল্ডার্স সরকারের যেসব প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত, সেগুলোর তথ্য চেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। গত রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক শামীম আহমেদ ১০ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে জরুরিভিত্তিতে এ তথ্য চেয়েছেন। তথ্য দেওয়ার জন্য ওই চিঠির সঙ্গে একটি ছকও পাঠিয়েছেন তিনি।
‘জি কে (বিল্ডার্স) নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চলমান কাজের তথ্য’ শিরোনামে চিঠিতে একটি ছক দিয়ে সেই ছক মোতাবেক জি কে বিল্ডার্সের চলমান প্রকল্পের তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
চিঠিটি স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো হয়।
জি কে শামীম গ্রেপ্তারের পর তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জি কে বিল্ডার্স সরকারের কী কী কাজ করছে সেগুলো আলোচনায় আসে। ওই সময় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, জি কে বিল্ডার্স সচিবালয়ের নতুন ভবন, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, গাজীপুরে র্যাবের কমপ্লেক্স, আজিমপুরে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণসহ এককভাবে সরকারের ১৩টি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। আবার একই প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে আরও ৪২টি প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত। সবক’টি প্রকল্পের চুক্তিমূল্য ৪ হাজার ৬৪২ কোটি ২০ লাখ টাকা। যার মধ্যে ১ হাজার ৩০১ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। আর সব মিলিয়ে জিকেবির এককভাবে করা প্রকল্পগুলোর গড় ভৌত অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ। যৌথভাবে করা প্রকল্পগুলোর ভৌত অগ্রগতি ৪২ শতাংশ। আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভবন এবং ন্যাশনাল নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের একটি ভবন যৌথভাবে নির্মাণ করছে জি কে বিল্ডার্স। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান এবং সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে দুটি আলাদা প্রকল্পও করছে এ প্রতিষ্ঠান। বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের চারটি অংশের কাজ করছে জিকেবি। জি কে বিল্ডার্সের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। পাঁচ বছর আগে শেষ হওয়ার কথা এমন প্রকল্পও তার গ্রেপ্তারের সময় চলমান ছিল। আবার গত বছরে শেষ করতে হবে এমন প্রকল্পের কাজ তিনি শুরুই করেননি।
গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানের নিকেতন অফিসে অভিযান চালিয়ে জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে আটক করে র্যাব। অভিযানের সময় এক কোটি ৮০ লাখ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ১৬৫ কোটি টাকার ওপরে এফডিআর (স্থায়ী আমানত) পাওয়া যায়। পাওয়া যায় মার্কিন ডলার, মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র।