গত কয়েকদিন আগে পতঙ্গপালের কারণে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল পাকিস্তানে। মাসের পর মাস কেটে গেলেও সেই অর্থে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। দেশজুড়ে বিপর্যয়। আর সেই বিপর্যয় কাটাতে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াল কমিউনিস্ট চীন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হাঁস পাঠাচ্ছে চীন।
অবাক হচ্ছেন তো! হ্যাঁ, তাও আবার কিনা ১লক্ষ হাঁস। করোনাভাইরাসের মতো ভয়ঙ্কর মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত বেজিং। এই অবস্থায় পাকিস্তানের পতঙ্গপাল সামলাতে কিনা ‘হাঁসবাহিনী’ পাঠাচ্ছে জি জিংপিং। গত কয়েক মাস ধরেই পতঙ্গপালের কারণে অতিষ্ট পাকিস্তান।মূলত, পূর্ব আফ্রিকা থেকেই ওই পতঙ্গপালের পাল হানা দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাকিস্তানে ওই পতঙ্গপালের ঝাঁক একরের পর একর জমির শস্য নষ্ট করে ফেলছে। পরিস্থিতি এতটাই জটিল আকার নিয়েছে যে সে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই হানাকে গত ২ দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ উল্লেখ করেছেন। আর তা মোকাবিলা করার ক্ষমতা নেই পাক প্রশাসনের। আর তাই মারণরোগে আক্রান্ত চীনের সাহায্য চেয়েছেন ইমরান। বন্ধু পাকিস্তানের এহেন বিপদে কি তাঁকে একা ফেলে দেওয়া যায়? যতই কিনা বিপদে থাকি না কেন! যেমনই ইমরান সাহায্য চেয়েছেন তেমনই বাড়িয়ে দিয়েছে হাত।
জানা গিয়েছে, পতঙ্গপালের হানা সামলাতে বিশেষ ‘শৃঙ্খলাপরায়ণ’ হাঁসগুলিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেজিং। বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই হাঁসের প্রজাতি মূলত পূর্ব চিনের ঝেজিয়াং প্রদেশ থেকে পাঠানো হবে। তবে, পূর্ণবয়স্ক নয়, হাঁসের ছানাকেই পাঠানো হবে বলে খবরে বলা হয়েছে।সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর মোতাবেক, আপাতত এক লক্ষ হাঁস পাঠানো হবে পাকিস্তানে। তবে ভয়ঙ্কর পতঙ্গপালের হানায় মারাত্মক ভাবে ক্ষতি হয়েছে সিন্ধম বালোচিস্তান এবং পঞ্জাব প্রদেশ। সেখানে যেভাবে এই পতঙ্গপাল হানা দিয়েছে তাতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে ওই সমস্ত এলাকার মানুষের জন জীবনও। ইতিমধ্যেই, চীনা কৃষি ও গ্রামীণ মনন্ত্রালয়ের বিশেষজ্ঞরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। কিন্তু, কেন হাঁস পাঠানো হচ্ছে? বা এই প্রজাতির হাঁসের বিশেষত্বই বা কী?
চীনা বিষেশজ্ঞ লিউ লিঝি জানিয়েছেন, গত দুদশক আগে পতঙ্গপালের হানায় চীনের অবস্থাও খারাপ হয়ে যায়। আর সেই সময় এই বিশেষ প্রজাতির হাঁস দিয়ে তার মোকাবিলা করা হয়েছিল। লিউয়ের মতে, হাঁসের ব্য়বহার মুরগির তুলনায় সাশ্রয়কর এবং এর কার্যকারিতা অনেক বেশি। পাশাপাশি, কীটনাশক ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। ফলত, পরিবেশ ও ফসলের প্রাকৃতিক গুণমান রক্ষা পায়।চীনা বিষেশজ্ঞ জানাচ্ছেন, হাঁস সবসময় ঝাঁকের মধ্যে থাকে। সামলানোও খুব সহজ। কিন্তু একটা মুরগি একদিন গড়ে যেখানে ৭০টা করে পতঙ্গপাল খেতে পারে সেখানে একটা হাঁসের ক্ষমতা ২০০টা করে খেতে পারে। ফলে চোখের পলকে পঙ্গপাল মারা আরও সহজ হবে। আর তাই এই হাঁসের প্রজাতি পতঙ্গপালের তুখোড় শিকারী বলেই পরিচিত।