জ্বলছে দিল্লি। ক্রমশ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত সংঘর্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৭০ জনেরও বেশি মানুষ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে দিল্লির বিশাল এলাকাজুড়ে জারি করা হয়েছে কার্ফু। নামানো হয়েছে ৫০ প্লাটুন আধ-সেনা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠে দিল্লির চাঁদবাগ এলাকা। একদিকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে আন্দোলন এবং অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের দমন করতে ময়দানে অন্যপক্ষ। দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেঁধে যায়, এলাকার একাধিক দোকানে চলে ভাঙচুর, আগুন।
তবে পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে গিয়েছে যে নতুন করে ফের কার্ফু জারি করার এলাকা বাড়ানো হয়েছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির চারটি এলাকায় নতুন করে কার্ফু জারি করা হয়েছে। সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও ৫০ কোম্পানি সিআরপি এফ নামানো হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৈরি র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স। প্রায় ছয় হাজার পুলিশকর্মী দিল্লিতে মোতায়েন করা হয়েছে। তবে যত সময় এগোচ্ছে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল আকার নিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এমন অবস্থায় সেনাবাহিনী নামানোর পরিকল্পনা করছে সরকার।
মঙ্গলবার সন্ধ্য়ায় নতুন করে উত্তর-পূর্ব দিল্লির একাধিক এলাকা অশান্ত হয়ে ওঠে। চাঁদবাগে সিএএ ও এনআরসির প্রতিবাদে পথে নামেন মানুষ। অনেককে লোহার রড, লাঠি নিয়েও দাপাদাপি করতে দেখা যায়। উল্টোদিকে, আন্দোলন দমনের নামেও কয়েকশো লোক জড়ো হয় এলাকায়। মুহূর্তে সংঘর্ষ বেঁধে যায় দু’পক্ষের মধ্যে। এরই মধ্যে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়েও বিক্ষোভ শুরু করে কয়েকজন। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে গিয়ে বিক্ষোভ তুলে দেয়।
দিল্লিবাসীকে শান্ত থাকার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রাজধানীর পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলেছেন কেজরিওয়াল। দিল্লির যে এলাকাগুলিতে অশান্তি ছড়িয়েছে সেই এলাকার বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সচেষ্ট হতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাইরে থেকে কেউ ঢুকে যাতে দিল্লির পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করতে না পারে সেব্যাপারে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন কেজরিওয়াল।
দিল্লির অশান্তিতে একশোরও বেশি সাধারণ মানুষ আহত হওয়ার পাশাপাশি ৫০-এর বেশি পুলিশকর্মীও আহত হয়েছেন। রবিবার থেকে শুরু হয়েছে সংঘর্ষ। দফায়-দফায় সংঘর্ষ ছড়িয়েছে জাফরাবাদ, মৌজপুর, চাঁদবাগ, ভজনপুরাচক এলাকায়। একদিকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন শত শত মানুষ। উল্টোদিকে সিএএ ও এনআরসির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে পথে নেমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন অন্যপক্ষ।