শিবরাত্রি অর্থাৎ ভগবান শিবের রাত্রি। পৌরানিক মতে এই তিথিতে ভগবান শিবের সাথে পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল। এটা ভগবান শিবের আরাধনায় রাত্রি যা ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে পালন করা হয়। অন্য দেবতার পুজো যখন দিনের বেলায় করা হয় তখন শিবের পুজো রাত্রে কেন, মনে এই প্রশ্ন জাগতেই পারে।
ভগবান শিব তমোগুণ সম্পন্ন। সুতরাং তমোময়ী রাত্রি শিবের পছন্দ। রাত্রি সংহারকালে প্রতিনিধিত্ব করে। কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে চাঁদ সম্পুর্ন রূপে ক্ষীণ থাকে। জীবের ভিতরে তামসী প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পায়। যেমন জল আসার আগে বাঁধ দিতে হয় সেইরূপ চন্দ্রের ক্ষয় আসার আগে ঐ তামসী প্রভৃত্তি নিবারনের জন্য ভগবান আশুতোষের (শিব) আরাধনা শাস্ত্রকাররা বিধান দিয়েছেন। সংহারের পর নতুন সৃষ্টি অনিবার্য। আপনারা দেখছেন ফাল্গুন মাসে গাছের সব পাতা ঝড়ে গিয়ে নতুন পাতা গজায়। এটা সৃষ্টির নতুন রূপ।সেই লগ্নেই হয় এই উৎসব। এই বছর শিবরাত্রি/শিব চতুর্দশী ২১ ফেব্রুয়ারি, বাংলা ৮ ফাল্গুন ১৪২৬ সন। এই দিন অনেকেই হয়তো কোনও মন্দিরে না গিয়ে বাড়িতে পূজার্চনা করবেন। বাংলাদেশের সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ ধামে শিব চতুর্দশী উপলক্ষে ভিড় করেছেন পুণ্যার্থীরা। ‘হর হর মহাদেব’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে তীর্থ এলাকা।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে শিব দর্শন ও স্নান করানোর জন্য ডাবের জল, দুধ ও পূজার উপকরণ নিয়ে সমতল থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ ফুট ওপরে চন্দ্রনাথ মন্দিরে যাচ্ছেন বিভিন্ন বয়সী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।চন্দ্রনাথ মন্দিরে যাওয়ার পথে শম্ভুনাথ, বিরুপাক্ষ মন্দিরও দর্শন করছেন ভক্তরা। এছাড়া সীতাকুণ্ডের অর্ধশতাধিক মঠ-মন্দিরে ভিড় করছেন দেশ-বিদেশ থেকে আসা ভক্তরা। পাহাড় চূড়ায় অদ্বৈত-অচ্যুত মিশন চিকিৎসক ফোরামের উদ্যোগে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। মিশনের স্বেচ্ছাসেবকরা বিতরণ করছেন পানীয় জল।
তীর্থ যাত্রীদের নিরাপত্তায় ৫ শতাধিক পুলিশ, র্যাব, আনসারের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করছে বলে জানিয়েছেন সীতাকুণ্ড থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা।