অজুহাত একের পর বেড়েই চলেছে নিত্য ভোগ্যপণ্যের দাম। গত কয়েক মাস ধরে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা থাকলেও এখন কিছুটা কমেছে এর দাম। তবে এরই মধ্যে দর বাড়ার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে চাল। এক মাসের মধ্যে দুই দফা দাম বেড়েছে চালের বাজারে। চালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এবার দাম বাড়ার তালিকায় যোগ হয়েছে রান্নার অতিপ্রয়োজনীয় মসলার বাজার।
গত দেড় মাস ধরে দফায় দফায় দাম বেড়েছে রান্নায় অতিপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের। খুচরায় কোনো কোনো মসলার দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। বিশ্ববাজারে মসলার দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারগুলোতে মন্তব্য ব্যবসায়ীদের।শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে রাজধানী ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ রেলগেট বাজার এবং খিলগাঁও বাজারে প্রতিকেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৬শ থেকে পাঁ হাজার ৫শ টাকা কেজি দরে। অথচ এক থেকে দেড় মাসে আগে এলাচ বিক্রি হয়েছিলো দুই হাজার ৭শ থেকে তিন হাজার টাকা কেজি দরে। এখন বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৫শ থেকে তিন হাজার ৬শ টাকা কেজি দরে।আগে যত্রিক বিক্রি হয়েছিলো এক হাজার ৭শ থেকে এক হাজার ৮শ টাকা কেজি দরে। জায়ফল গত দেড় মাসে দ্বিগুণ বেড়ে এখন বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে আটশ টাকা কেজি দরে, এর আগে তা বিক্রি হয়েছিলো চারশ থেকে চারশ ৬০ টাকা কেজি দরে।
চট্টগ্রামের কাজীরদেউরি, চকবাজার, চৌমুহনীর কর্ণফুলী বাজারে ঘুরে দেখা যায় খোলা গুড়া মরিচের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ১৫০ টাকা যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা কেজিদরে। একইভাবে শুকনো মরিচ কেজিতে ১৩০ টাকা বেড়ে এটি এখন বিক্রি হচ্ছে তিনশ টাকা কেজিদরে, কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে চারশ থেকে ৪২০ টাকা। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ধনিয়া গুড়া বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিদরে, কেজিপ্রতি ১শ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি কালো এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকা কেজিদরে, কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি হলুদ গুড়া বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিদরে।তবে অন্যান্য মসলাজাতীয় পণ্য যেমন আদা, রসুন, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। খুচরা বাজারে দেশি রসুন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, ইন্ডিয়ান ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, আদা ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা, পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৮০, চায়না ৬০ টাকা, বার্মা ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মসলার দাম বাড়া নিয়ে চকবাজারের এক ক্রেতা সিএনএন ক্রাইম নিউজকে বলেন, এক মাস ধরে কয়েক দফায় মসলার বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অথচ বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। এখনই ব্যবস্থা না নিলে মসলার বাজারে অস্থিরতা কাটবে না।
তিনি আরও বলেন, বাজারে কোনো মসলার ঘাটতি নেই অথচ ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় দাম বাড়াচ্ছেন। তাদের এ দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।মসলা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ জানান, বিশ্ববাজারে মসলার দাম অনেক বেশি, এ কারণে দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। তাছাড়া ভারত মসলার রপ্তানিকারক দেশ হলেও বৃষ্টি বা বন্যায় তাদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারা নিজেরাই মসলা এখন আমদানি করছে। রমজানের আগে ভারতে মসলার উৎপাদন যদি হয়, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তবেই মসলার দাম অনেক কমে আসবে।
এদিকে ব্যবসায়ীদের কথার সঙ্গে একমত নন ক্রেতারা। তারা বলছেন, দেশের বাজারে মসলার কোনো ঘাটতি নাই, থাকলেও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছেন মসলার। সরকারিভাবে বাজার মনিটরিং না করলে লাগামহীন হয়ে যাবে মসলার বাজার।
CNNcrimenews.