সীমান্তে মিয়ানমারের স্থল মাইন স্থাপন, টেকনাফ-উখিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলে রোহিঙ্গা বসতিসহ নানা সমস্যায় পড়ে বন্য হাতির পাল ক্রমশ লোকালয়মুখি হয়ে পড়ছে। ফলে হাতির তাণ্ডবে যেমন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি বাড়ছে প্রাণহানির শঙ্কা। গত ৬ মাসে বৃহত্তর চট্টগ্রামে হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৬ জনের। সেই সঙ্গে প্রতিবন্ধকতায় পড়ে মারা গেছে ৩টি হাতি।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার জ্যেষ্টপুরা ইউনিয়নের পাহাড়ি অঞ্চলের গাছ কেটে যেমন বনাঞ্চল উজাড় করা হয়েছে। আবার পাহাড়ের মাঝেই তৈরি করা হয়েছে যানবাহন চলাচলের বড় রাস্তা। এভাবেই বনাঞ্চল উজাড় হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে হাতির সব আবাসস্থল। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমারের স্থল মাইন স্থাপন এবং পাহাড়ি অঞ্চলে গড়ে তোলা রোহিঙ্গা বসতি।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. এইচ এম রায়হান সরকার বলেন, শরণার্থী শিবিরের জন্য বন্য হাতি চলাচলের দুটি করিডোর বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণেই হাতির সঙ্গে মানুষের দ্বন্দ্ব।
সরকারি বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত ৬ মাসে বৃহত্তর চট্টগ্রামে হাতির আক্রমণে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু গত নভেম্বর মাসে লোকালয়ে হাতির আক্রমণে বোয়ালখালীতে ৫ জন ও লোহাগড়ায় ১ জনের মৃত্যু হয়। চলতি মাসে আনোয়ারায় আরও একজন মারা গেছে।বারবার হাতির পাল লোকালয়ে নেমে আসায় আতঙ্ক বাড়ছে বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে। তারা বলেন, লোকালয়ে হাতি আসার কারণে সবসময় আতঙ্কে থাকে এলাকাবাসী।
গত এক বছরে ৩টি হাতি মারা গেছে। হাতির বিশাল আবাস্থল বৃহত্তর চট্টগ্রাম হলেও এখানে নেই এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম। তবে হাতির খাদ্য সঙ্কট মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে বন বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন।তিনি বলেন, হাতিকে স্থায়ীভাবে এলাকায় আসা বন্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা বন বিভাগকে জানিয়েছি।
বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় এখনো ৩০ থেকে ৪০টি হাতির অবস্থান রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
CNncrimenews.